খড়িবাড়ির জাল জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র মামলায় TMC নেতার ছেলে পার্থ গ্রেফতারSiliguri Fake Certificate Case: জাল জন্ম ও মৃত্যু শংসাপত্র জালিয়াতি কাণ্ডে অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত পার্থ সাহা। শুক্রবার গভীর রাতে দার্জিলিং জেলা পুলিশের খড়িবাড়ি থানার পুলিশ নেপাল সীমান্তের ডাঙ্গুজোত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। শনিবার সকালে তাকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে, যাতে চক্রের বাকি পাণ্ডাদের ধরতে পারে।
খড়িবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পার্থ সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারি রেকর্ডে কারচুপি করে জাল জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র তৈরি ও বিক্রি করা হচ্ছিল। অভিযোগ দায়ের করেছিলেন খড়িবাড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ শফিউল আলম মল্লিক। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর জানতে পারে, এ বছরের মে থেকে জুলাই পর্যন্ত ওই হাসপাতালে তৈরি হওয়া ১০১৪টি শংসাপত্রের মধ্যে অন্তত ৮৪৪টি জাল।
তদন্তে উঠে এসেছে, সিকিম, বিহারসহ বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ মোটা টাকার বিনিময়ে এই হাসপাতাল থেকে জাল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছে। এই জালিয়াতির পেছনে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে খড়িবাড়ি।
অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই ফেরার ছিল পার্থ সাহা। পুলিশের অনুমান, সে নেপালে পালিয়ে গিয়েছিল। এর আগে এই একই মামলায় খড়িবাড়ি থানার পুলিশ নকশালবাড়ি বিডিও অফিসের বিএসকে কর্মী নবজিৎ গুহ নিয়োগীকে গ্রেফতার করেছিল। নবজিতের জবানবন্দির ভিত্তিতেই পুলিশের হাতে আসে পার্থর অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য।
পার্থ ও নবজিতের মোবাইল ফোন থেকে আর্থিক লেনদেনের বেশ কিছু প্রমাণ ও জাল সার্টিফিকেট সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ জানিয়েছেন, এই মামলায় আরও বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত কিছু জানানো সম্ভব নয়।
এই কাণ্ডকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিরোধী দল বিজেপি দাবি তুলেছে, গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্ত হোক। অন্যদিকে, প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সরকারি নথিপত্র জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত কাউকেই ছাড়া হবে না।
খড়িবাড়ি ও আশপাশের এলাকায় এই জাল শংসাপত্র কেলেঙ্কারি নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, বহু দিন ধরেই এই ধরনের অনিয়ম চলছিল, কিন্তু এখন পুলিশের হাতে মূল অভিযুক্ত ধরা পড়ায় আশার আলো দেখছেন সাধারণ মানুষ।