Shreyas Iyerসিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে চোট পেয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের সহ অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল, সামান্য চোট। তবে পরে জানা যায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন শ্রেয়স। তাঁর বাঁ দিকের পাঁজরের নীচে প্লীহার চোট লেগেছে। প্রাথমিকভাবে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে এখন তিনি বিপদমুক্ত। যদিও চিকিৎসকরা মনে করছেন, সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে শ্রেয়সের মাঠে ফিরতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে।
প্লীহার কাজ কী?
বাম দিকের পাঁজরের কাছে অবস্থিত প্লীহা। দেখতে মুষ্টিবদ্ধ হাতের মতো। এর দুটো কাজ। প্রথমত, সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই ও দ্বিতীয়ত, পুরোনো বা ক্ষতিগ্রস্ত লোহিতকণিকাকে রক্ত থেকে অপসারণ করা। অনেকটা ফিল্টারের মতো কাজ করে। লোহিত রক্তকণিকার আয়ুষ্কাল প্রায় ১২০ দিন। যার পর প্লীহা সেগুলোকে শরীর থেকে অপসারণ করে দেয়।
চিকিৎসকদের মতে, বাম দিকের পাঁজরে আঘাত লাগলে প্লীহা ফেটে যেতে পারে। তার জেরে মৃত্যুও হওয়া অসম্ভব নয়। সম্প্রতি প্রকাশিত একাধিক মেডিকেল বুলেটিনে দাবি করা হয়েছে, প্লীহা ফেটে গিয়ে কতটা রক্তপাত হয়েছে তার উপর নির্ভর করবে সেই রোগী বাঁচবেন না মারা যাবেন। প্লীহাতে যদি ছোটোখাট আঘাত লাগে, আঁচড় বা দাগের মতো হয়, তাহলে তা সেরে যাবে নিজে থেকেই। তবে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হলে অস্ত্রোপচার হতে পারে।
প্লীহার চিকিৎসা ডাক্তাররা করবেন কীভাবে?
যদি অবস্থা স্থিতিশীল থাকে তাহলে রোগীকে প্রথমে ICU-তে রাখা হয়। যদি রক্তপাত বন্ধ হয় তাহলে রোগীর স্বাভাবিক নিরাময় প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে, রক্তপাত অব্যাহত থাকে বা বৃদ্ধি পায় তাহলে ডাক্তাররা রক্তক্ষরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্লীহা অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়।
প্রথম কয়েক দিনের পর কী হয়?
প্লীহায় আঘাত লাগার পরবর্তী ২৪-৪৮ ঘন্টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে ডাক্তাররা ধীরে ধীরে রোগীকে নড়াচড়া, খাওয়া বা পান করার অনুমতি দেন। প্রতিদিন স্ক্যান করা হয়। রক্তপাত বন্ধ হওয়ার পর, রোগীকে প্রায় এক সপ্তাহের জন্য সতর্ক পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে রাখা হয়।
চিকিৎকরা জানাচ্ছেন, প্লীহা পুরোপুরি সেরে উঠতে কমপক্ষে ৬-১২ সপ্তাহ সময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে, ডাক্তাররা কোনও শারীরিক সংস্পর্শ, আঘাত বা ভারী কাজ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। কারণ আঘাত লাগলে ফের রক্তপাত হতে পারে। অর্থাৎ শ্রেয়স প্রায় তিন মাসের জন্য ক্রিকেটের বাইরে থাকবেন।
শ্রেয়স কি ক্রিকেট খেলতে পারবেন? ডাক্তাররা বলছেন, প্লীহার আঘাতে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষ দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা ছাড়াই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। আঘাত খুব গুরুতর বা তাড়াতাড়ি ধরা না পড়লে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া কঠিন। তবে ক্রিকেটারকে এখন ডাক্তারদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। সেখানে তাঁর প্রতিদিন স্ক্যান হবে।