সোনারপুরে হাড়হিম ঘটনা।Customs officer attack Rajpur: দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে ভয়াবহ ঘটনা। একশোর উপর লোক জড়ো করে কাস্টমস অফিসারের বাড়িতে চড়াও হলেন অটোচালক। রীতিমতো আবাসনের গেট ভেঙে ঢুকে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল আধিকারিকের। আক্রান্ত অফিসার বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
কিন্তু এই হামলার কারণটা কী?
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, রাস্তার ধারে এক অটোচালকের সঙ্গে ওই আধিকারিকের বাদানুবাদ হয়েছিল। আর তারপরেই 'প্রতিশোধ' নিতে এহেন পন্থা নেন অভিযুক্ত অটোচালক।
অফিসারের নাম প্রদীপ কুমার। তিনি জিএসটি ও কাস্টমস দফতরে কর্মরত। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের গাড়ি নিয়ে রাজপুরের আবাসনে ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় একটি অটো তাঁর গাড়িতে ধাক্কা মারে। এই নিয়ে শুরু হয় তর্কাতর্কি।
এরই মধ্যে অটোচালক পালিয়ে গিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসে। সঙ্গে নিয়ে আসে প্রায় শতাধিক লোকলস্কর। এরপর শুরু হয় তাণ্ডব।
প্রদীপবাবু জানান, 'আমি ভাবছিলাম আজই শেষ হয়ে যাব। লোহার গ্রিল, গেট, তালা সব ভেঙে ঢুকে পড়ে। আমায় মারতে শুরু করে, মাথা ফাটিয়ে দেয়। স্ত্রীকেও ধাক্কা মারে।'
তিনি আরও জানান, 'বহুবার পুলিশে ফোন করেছি। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। পুলিশের তরফে বলা হয়, তাঁরা পুজোর বিসর্জনের ডিউটিতে ব্যস্ত। তাই এখন সাহায্য পাঠানো সম্ভব নয়।'
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একদল মানুষ গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকছে। প্রদীপবাবু তখন নিজের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করে ছিলেন। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি। রীতিমতো কোলাপসিবল গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকে হামলাকারীরা। বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
আক্রান্ত প্রদীপবাবু উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে গত নয় বছর ধরে কলকাতায় আছেন। এর আগে কখনও এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়নি বলে জানান তিনি।
ঘটনার পর শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযানে নামে। প্রথমে আজিজুল গাজি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জেরায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শনিবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক রঙও লাগে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পৌঁছে যান রাজপুরে। দেখা করেন প্রদীপবাবুর পরিবারের সঙ্গে। ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, অটো, টোটোর দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিবাদ করলেই ইউনিয়নের রোষে পড়তে হয়। এক্ষেত্রেও তাই। সামান্য গাড়ির ধাক্কা থেকেই এমন ভয়ানক কাণ্ড। রবিবারও দেখা গেল আবাসন সংলগ্ন এলাকায় রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ।