চাকরি পরিবর্তনের পর যদি আপনি আপনার পুরনো বেতন অ্যাকাউন্ট বন্ধ না করে থাকেন, তাহলে এটি আপনার জন্য আর্থিক সমস্যার কারণ হতে পারে। ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী, যদি দুই থেকে তিন মাস ধরে বেতন অ্যাকাউন্টে জমা না হয়, তাহলে তা একটি সাধারণ সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে পরিণত হয়। এই ক্ষেত্রে, ন্যূনতম ব্যালেন্স বজায় না রাখার জন্য ব্যাঙ্ক জরিমানা আরোপ করতে পারে। সুতরাং যদি আপনি আপনার পুরনো বেতন অ্যাকাউন্টটি বন্ধ না করে থাকেন, তাহলে জেনে নিন কেন এটি অবিলম্বে বন্ধ করা আপনার জন্য প্রয়োজনীয়।
স্যালারি অ্যাকাউন্ট
নতুন চাকরি পাওয়ার পর নতুন বেতন অ্যাকাউন্ট খোলা একটি সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু আপনার পুরনো বেতন অ্যাকাউন্টের কী হবে? বেশিরভাগ মানুষ তাদের পুরনো বেতন অ্যাকাউন্টটি এভাবেই রেখে দেন। কিন্তু আপনি কি জানেন যে আপনার এই চিন্তাভাবনা ব্যয়বহুল প্রমাণিত হতে পারে? ব্যাঙ্ক আপনার পুরনো অব্যবহৃত বেতন অ্যাকাউন্টের উপর কেবল বিভিন্ন চার্জই আরোপ করতে পারে না, বরং জরিমানাও আরোপ করতে পারে। তাহলে আসুন জেনে নিই বেতন অ্যাকাউন্ট বন্ধ না করার প্রধান অসুবিধাগুলি কী কী হতে পারে?
সাধারণ সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন
যখনই আপনার বেতন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টানা ২-৩ মাস ধরে বেতন জমা না হয়, তখন বেশিরভাগ ব্যাঙ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটিকে একটি নিয়মিত সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে (Regular Savings Account) রূপান্তর করে। এটি একটি রেগুলার অ্যাকাউন্টে রূপান্তরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চার্জের গল্প এখান থেকেই শুরু হয়। আসলে, বেতন অ্যাকাউন্টগুলি প্রায়শই জিরো ব্যালেন্সের মতো সুবিধা সহ খোলা হয়, কারণ কোম্পানির ব্যাঙ্কের সঙ্গে একটি চুক্তি থাকে এবং বেতন বন্ধ হয়ে গেলে এই সুবিধাগুলি শেষ হয়ে যায়।
কখন জরিমানা আরোপ করা হবে?
আসলে যা ঘটে তা হল, আপনার বেতন অ্যাকাউন্টটি একটি সাধারণ সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে রূপান্তরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, ন্যূনতম গড় ব্যালেন্স (MAB) বজায় রাখার সমস্ত শর্তও এতে প্রযোজ্য হয়। যদি আপনি এই ব্যালেন্স বজায় না রাখেন, তাহলে ব্যাঙ্ক প্রতি মাসে বা ত্রৈমাসিকে জরিমানা কেটে রাখবে। তবে, এটি ব্যাঙ্ক এবং শাখা (শহুরে/গ্রামীণ) অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে।
বার্ষিক বিল এবং SMS চার্জ
প্রায়শই, একটি বেতন অ্যাকাউন্টে বার্ষিক ডেবিট কার্ড ফি মওকুফ বা হ্রাস পাওয়ার সুবিধা থাকে, তবে এটি একটি সাধারণ সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে রূপান্তরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এটি সম্পূর্ণরূপে পুনরুদ্ধার করা হয়। এছাড়াও, বেতন অ্যাকাউন্টে বিনামূল্যে পাওয়া যায় এমন এসএমএস অ্যালার্টেরমতো পরিষেবার জন্যও চার্জ ধার্য করা হতে পারে।
অ্যাকাউন্টে কোনও লেনদেন নেই
যদি আপনি ১-২ বছর ধরে আপনার অ্যাকাউন্টে কোনও লেনদেন না করেন (টাকা জমা বা তোলা না), তাহলে ব্যাঙ্ক এটিকে 'অকার্যকর' বা 'নিষ্ক্রিয়' অ্যাকাউন্টে রূপান্তর করতে পারে। এই ধরনের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা বা পুনরায় সক্রিয় করতে অনেক সময় লাগতে পারে, যার জন্য আবার KYC করতে হবে।
ক্রেডিট স্কোরের উপর প্রভাব
আপনার বেতন অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে, বারবার চার্জ কেটে নেওয়া হয় এবং ব্যালেন্স নেতিবাচক হয়ে যায়, যা আপনার ক্রেডিট স্কোরের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে। ব্যাঙ্ক এটিকে 'পাওনা পরিশোধ না করা' হিসেবে রিপোর্ট করতে পারে।
প্রয়োজন না হলে বন্ধ করে দিন
যদি আপনার একটি পুরনো বেতন অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে সবচেয়ে ভালো উপায় হল একটি ফর্ম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরনো বেতন অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া। এছাড়াও, যদি আপনাকে এটি রাখতেই হয়, তাহলে এতে ন্যূনতম ব্যালেন্স বজায় রাখুন। এই অ্যাকাউন্ট থেকে একবার বা দুবার ছোট ছোট লেনদেন করতে থাকুন যাতে অ্যাকাউন্টটি সক্রিয় থাকে।
কী করবেন আর কী করবেন না?
আপনার পুরনো বেতন অ্যাকাউন্টটি আপনার কাছে ছোটখাটো বিষয় মনে হতে পারে, কিন্তু এটি উপেক্ষা করা ব্যয়বহুল হতে পারে, এটি আপনার আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং আপনাকে অপ্রয়োজনীয় সমস্যায় ফেলতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, বুদ্ধিমান হোন, আপনার টাকার মূল্য বুঝুন
(বিঃদ্রঃ- - খবরটি সাধারণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি)