কসবার ল কলেজে ২৪ বছর বয়সী এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল। জানা গেছে, ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র কলেজে নির্যাতিতা তরুণীকে প্রথম দিন থেকেই টার্গেট করেছিল। ঘটনাটি নিছক আকস্মিক নয়, বরং এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে পূর্বপরিকল্পিত একটি ষড়যন্ত্র।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মনোজিতের সঙ্গে অন্য অভিযুক্ত প্রতিম মুখার্জি এবং জয়িব আহমেদেরও কলেজে ছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানির দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। কলেজের এক নিরাপত্তারক্ষীও এই ষড়যন্ত্রে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন ঘেঁটে এমন বেশ কিছু ভিডিও এবং চ্যাট পাওয়া গেছে, যা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে তারা একাধিক মহিলাকে টার্গেট করে নির্যাতন চালিয়েছে। এবং ভিডিও রেকর্ড করে ব্ল্যাকমেলের উদ্দেশ্যে সেভ করেছে। ২৫ জুনের ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপও তারা শেয়ার করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখন খতিয়ে দেখছে ভিডিওটি অন্য কোথাও ছড়ানো হয়েছে কি না। এবং কোনও চক্র এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কি না।
নির্যাতিতা তরুণী পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, মনোজিৎ মিশ্র তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তরুণী সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। জানান, তাঁর প্রেমিক রয়েছে। অভিযুক্ত মনোজিৎ রেগে যায়। একপর্যায়ে তাঁকে একটি ঘরে আটকে রেখে তাঁর ও তাঁর প্রেমিককে খুনের হুমকি দেয়। এমনকি তাঁর বাবা-মাকে গ্রেফতার করানোরও হুমকি দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যেই মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতার শরীরে জোর করে অনুপ্রবেশ, কামড় এবং নখের আঁচড়ের মতো একাধিক চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এই ঘটনায় ফের একবার কলকাতার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত যেকোনও চক্রকেও শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।