কসবা কাণ্ডে ৩ অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র, প্রমিত মুখোপাধ্যায় এবং জইব আহমেদকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে লালবাজার। জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ আইনের প্রথম বর্ষের ছাত্রীর গণধর্ষণে অভিযুক্তদের নিয়ে সাউথ ক্যালকাটা ল'কলেজে পৌঁছয় তদন্তকারী দল। ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সেখানে রয়েছেন তাঁরা। জানা যাচ্ছে, কলেজের অন্দরে ইউনিয়ন রুমে চলছে ক্রাইম সিনের পুনর্গঠন।
ধৃত নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণের ভিডিও করা হচ্ছে। ২৫ জুন সন্ধ্যার পর থেকে যা যা ঘটেছিল তা ক্রমানুপর্যায়ে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
সকালেই বিরাট পুলিশ বাহিনী পৌঁছে যায় কসবার ওই কলেজে। গণধর্ষণের ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য আনা হয় তিন অভিযুক্তকে। ইউনিয়ন রুম থেকে গার্ড রুম, প্রতিটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁদের। ওই রাতে কোন জায়গায় কী ঘটেছিল, নির্যাতিতার সঙ্গে তারা কী কী করেছিল, যাবতীয় তথ্য জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারীরা। নতুন কোনও তথ্য সামনে আসে কি না, তার দিকেও রয়েছে নজর। ১৬ ঘণ্টার CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। নির্যাতিতাকে প্রথমে শৌচালয় তারপর ইউনিয়ন রুম এবং শেষ পর্যন্ত গার্ড রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই কারণেই ঘটনার পুনর্নির্মাণে কলেজের ফার্স্ট ফ্লোর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গার্ডের বয়ানের সঙ্গে অভিযুক্তদের বয়ান মিলছে কি না, এবং সর্বোপরি তা নির্যাতিতার অভিযোগের সঙ্গে মিলছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই এই ক্রাইম সিনের পুনর্নির্মাণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। গোটা কলেজ চত্বর এদিন সকাল থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।
অন্যদিকে, আদালতে জমা দেওয়া নথিতে মনোজিতকে ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী’ বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ। সাউথ ক্যালকাটা ল'কলেজেরই ছাত্রছাত্রীদের বয়ানে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে ভাইস প্রিন্সিপালের মনোজিতের প্রতি অপত্য স্নেহের কথাও। মনোজিৎ মিশ্রর বিরুদ্ধে ছাত্রদের প্রবল মারধর করা, প্রাণে মারার হুমকি, তাঁদের বাবা-মাকে ভয় দেখানো, মহিলাদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ, শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। তা সত্ত্বেও বুক ফুলিয়েই ঘুরে বেরিয়েছে সে। তাকে ছুঁতে পারেনি পুলিশও। ছাত্রদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশকে থোরাই কেয়ার করত মনোজিৎ। পুলিশের উর্দি কেড়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে সে। এখন সেই গুণধরই গণধর্ষণে অভিযুক্ত । এখন গিয়ে মনোজিৎকে 'অত্যন্ত প্রভাবশালী' মনে হয়েছে পুলিশের। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা পরস্পরবিরোধী বয়ান দিয়ে তদন্তকে ভুল পথে চালিত করে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।