আমুর ফ্যালকনবিশ্বের সবথেকে ছোট এবং সাহসী পাখিদের মধ্যে অন্যতম আমুর ফ্যালকন। আর আবার এই ছোট্ট পাখি কামাল করেছে। মণিপুরের স্যাটেলাইট ট্যাগ করা তিনটি আমুর ফ্যালকন পাখি হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ভারত থেকে পৌঁছে গিয়েছে আফ্রিকার দক্ষিণ অঞ্চলে। ৬ দিনেই তারা ৫০০০ থেকে ৬১০০ কিমি উড়ে গিয়েছে। পৌঁছে গিয়েছে জিম্বাবোয়, কেনিয়া এবং সোমালিয়া। আর এই ঘটনাই আরও একবার প্রমাণ করে দিল এই পাখিগুলি ঠিক কতটা সাহসী।
এই ছোট ৩ পাখির নাম হল, আপং, আলং এবং আহু। এই তিন পাখিকেই স্যাটেলাইট ট্যাগ করা রয়েছে। ফলে তারা কোথাও উড়ে গেলে সেই গতিপথকে চিহ্নিত করা যায়।
আপংয়ের অসাধারণ যাত্রা...
এই তিন পাখির মধ্যে সবথেকে অবিশ্বাস্য যাত্রাটা করেছে আপং। এই পাখিটি ৬ দিন ননস্টপ যাত্রা করেছে নভেম্বর মাসে। এই ৬ দিনে সে ৬১০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়েছে। ভারত থেকে শুরু করে আরব সাগর পেরিয়ে কেনিয়ায় পৌঁছে গিয়েছে। এই ক্রিসমাসের সময় সে জিম্বাবোয়ের হারারে শহরের উপর দিয়ে উড়ে গিয়েছে। আর এই যাত্রাতেই বিস্মৃত হয়ে গিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ছোট্ট একটা ফ্যালকন পাখির এত দূর যাত্রা ভাবাই যায় না।
আলং এবং আহুর যাত্রাপথ আলাদা
ইয়েলো ট্যাগ আলং পাড়ি দিয়েছে ৫৬০০ কিমি। তেলেঙ্গনা এবং মহারাষ্ট্রে কিছুটা সময় কাটানোর পরই সে পৌঁছে গিয়েছে কেনিয়া।
ওদিকে রেড ট্যাগ আহু বাংলাদেশে কিছুটা সময় দাঁড়িয়েছিল। তারপর আরব সাগরের উপর দিয়ে ৫১০০ মিটার যাত্রা করে সোমালিয়ায় পৌঁছে গিয়েছে।
কীভাবে জানা গেল এই তথ্য?
ডাঃ সুরেশ কুমার, ওয়াল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার একজন গবেষক এই পাখিগুলির শরীরে স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগিয়ে দেন। এই ট্যাগগুলিই পাখিদের উড়ানের গতিবিধি জানাতে পারে। আর সুপ্রিয় সাউ নামের এক IAS অফিসার এক্স-এ এই তিন পাখির যাত্রাপথ শেয়ার করেন। তারপর থেকেই সারা পৃথিবীতে এই নিয়ে হইচই পড়ে যায়।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
আমুর ফ্যালকন খুবই ছোট আকারের পাখি। তবে এরা অনেক দূর পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। তাদের এই উড়ানই জানিয়ে দেয় যে পৃথিবীর বিভিন্ন কোণের বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে যোগ রয়েছে কতটা।
এই পাখিদের যাত্রাপথ ভারত থেকে শুরু করে আফ্রিকায় পৌঁছে যায়। অনেক দেশের উপর দিয়ে যায় এই পাখি। তাই সব দেশেরই এই পাখি সংরক্ষণ করা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, এক সময় আমুর ফ্যালকনের শিকার হতো নাগাল্যান্ডে। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। সচেতনতা বাড়ায় কমেছে শিকার।