Vaishno Devi Landslide: ভূস্বর্গ যখন 'নরক', লাশের পর লাশ, ৫২ বছরে রেকর্ড বৃষ্টি, ভয়ঙ্কর সব ছবি

গত কয়েক দশকের মধ্যে এমন ভয়ঙ্কর বৃষ্টি দেখেছি জম্মু-কাশ্মীর। সর্বকালীন রেকর্ড ভেঙে উধমপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে চলছে ভয়াবহ ধস, হড়পা বান। যার জেরে উপত্যকা জুড়ে ধ্বংসের দৃশ্য। প্রকৃতি যেন তাণ্ডব চালাচ্ছে ভূস্বর্গে। এমন ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ খুব কমই দেখেছে উপত্যকাবাসী। 
 

মৌসম ভবন জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় উধমপুরে বৃষ্টি হয়েছে ৬২৯.৪ মিলিমিটার। বুধবার সকাল ৮.৩০ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৩১ জুলাইয়ের ৩৪২ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ডও ভেঙে চুরে গিয়েছে।

এই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জম্মুতে বৃষ্টি হয়েছে ২৯৬ মিলিমিটার। যা শহরের পূর্বের অনেক রেকর্ডই ভেঙে ফেলেছে। ১৯৭৩ সালে অর্থাৎ ৫২ বছর আগে জম্মু সাক্ষী ছিল ২৭২.৬ মিলিমিটার বৃষ্টির। 

উপত্যকায় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে প্রবল প্রাণহানি হয়েছে। ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে এখনও পর্যন্ত। যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার ভোরে কাটরার কাছে অর্ধকুমারিতে বৈষ্ণো দেবীর যাত্রাপথে বড় ধস নামে। মঙ্গলবারই ওই একই যাত্রাপথে ধস নেমেছিল। বহু মানুষ আহত হয়েছেন এই ঘটনায়। আপাতত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে বৈষ্ণো দেবী যাত্রা। 

প্রবল বর্ষণের জেরে উদ্ধারকাজও ব্যাহত হচ্ছে। হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে একাধিক ব্রিজ, ভেঙে পড়েছে মোবাইল টাওয়ার। বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে গোটা ভূস্বর্গে। বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগহীন হয়ে রয়েছে। বন্যা অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে জম্মুতে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলি থেকে ৫০০ মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা। 

জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা জানিয়েছেন, ভারতের মূল ভূখণ্ডের থেকে কাশ্মীর থেকে জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টেলিকম ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে সম্পূর্ণরূপে। ইন্টারনেট পরিষেবাও মিলছে না।

ওমর আবদুল্লা এক্স পোস্টে লেখেন, 'কোনও সংযোগ পাচ্ছি না। অনেকক্ষণ থেকে স্ট্রাগল করছি। জিও ফোনে ডেটা থাকলেও সংযোগ নেই। কোনও ওয়াই ফাই পরিষেবা কাজ করছে না। ব্রাউজিং করা যাচ্ছে না। কোনও অ্যাপও খোলা যাচ্ছে না। এক্স হ্যান্ডলও অতি কষ্টে খুলছে। হোয়াটসঅ্যাপ করতেও বেগ পেতে হচ্ছে। ছোট ছোট মেসেজও ঠিকঠাক ভাবে পৌঁছচ্ছে না। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলোর মতো ডিসকানেক্টেড মনে হচ্ছে নিজেকে।'

ভারতীয় সেনা, NDRF এবং SDRF একত্রে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে নাগরিকদের সরিয়ে সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যআওয়া হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করছেন। 

দক্ষিণ কাশ্মীরের ঝিলাম নদী সংলগ্ন স্থানে বন্যার অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সঙ্গমের কাছে ২২ ফুট উচ্চতায় বইছে ঝিলাম নদীর জল। যা বিপদসীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। জম্মু, আরএস পুরা, সাম্বা, আখনুর, নাগরোটা, কোল ভাওয়াল, বিষ্ণা, বিজয়পুর, পুরমণ্ডল এবং কাঠুয়া ও উধমপুরের কিছু কিছু এলাকায় এখনও চলবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টি।